ফরিদগঞ্জে সেচকাজে কৃষকদের নিদারুণ কষ্ট

সেচ খালে পানিস্বল্পতায়

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো
সেচ খালে পানি প্রবাহ কম থাকায় চলতি ইরি বোরো মৌসুমে ফরিদগঞ্জের কয়েকটি অঞ্চলে পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। খালে পানি প্রবাহ বাড়াতে কৃষকরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তারা পাউবোর সাথে কথা বলেছেন, ৩/৪ দিনের মধ্যে খালে পানি প্রবাহ বাড়বে বলে তাদের আশ^স্ত করেছেন। ঘটনা জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও।
জানা গেছে, চাঁদপুর সেচ প্রকল্প আওতাভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা, বদরপুর, গাব্দেরগাঁওসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের সেচ খালে পানিস্বল্পতার কারণে সেচকাজে কৃষকদের নিদারুণ কষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা বোরো আবাদের জন্য চারা রোপণ করলেও তাতে পানি দিতে পারছেন না। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বারপাইকা ২ কিউসেক এলপিসি স্কীম খালে পানি সরবরাহের জন্য বারপাইকা ২ কিউসেক এলপিসি স্কীম ম্যানজার প্রফেসর ডা. মো. তসলিম উদ্দিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
তিনি আবেদনে জানান, কৃষির এই ভরা মৌসুমে সেচ প্রকল্পের পানির অভাবে উপরোক্ত স্কীমের চাষাবাদ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ইচ-১১ খালে পানি নাই। পাম্পে পানি আসছে না। যদিও ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খালে পানি আসেনি।
সরেজমিন গতকাল বুধবার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা, বদরপুর ও গাব্দেরগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা চলতি বোরো মৌসুমে মাঠে কিছু অংশে চারা রোপণ করেছেন, আবার কিছু অংশে চারা রোপণ করতে পারেননি। চারা রোপণ করলেও পানির অভাবে মাঠ ফেঁটে যাচ্ছে। অন্যদিকে পানির অভাবে কিছু কিছু মাঠে চারা রোপণই করতে পারেননি কৃষকরা। অন্যদিকে ইচ-১১ খালে পানি আছে নামমাত্র। এই পানি বিএডিসির সেচপাম্প দিয়ে উঠবে না। দ্রুত সেচখালে পানি সরবরাহ না বাড়লে বোরো আবাদে ব্যঘাত ঘটবে।
কৃষক ইমরান, মিজান, আনোয়ারসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, সেচ পাম্প দিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে ঠিকমত পানি আসছে না। এতে আমরা বিপদে পড়েছি। বিগত বছরে ধানের আবাদ করে লোকসান দিলেও আবারো ঝুঁকি নিয়ে চারা রোপণ করেছি। কিন্তু সেচ পানি না পেলে আমাদের মাথায় বাজ পড়বে। আমাদের হাহাকার শুনবে কে?
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার জানান, বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তিনিসহ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এস তছলিম আহমেদ, ইউএনও মৌলি মন্ডল সরেজমিন গিয়ে দেখে এসেছেন। কৃষকদের দাবি সঠিক। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছেন। স্লুইচগেটের একটি পাম্প বিস্ফোরণ হওয়ায়, পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। তারা পানি ছাড়া শুরু করেছে। ৩/৪/ দিনের মধ্যে সেচখালে পানি প্রবাহ বাড়বে বলে তারা আশ^স্ত করেছেন।
উপজেলা পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এস তছলিম আহমেদ জানান, বুধবার মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপনের পর তিনি সরেজমিন গিয়ে দেখেছেন। সেচখালে পানি সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন।

২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪।