হাইমচরে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি

শিশু থেকে বৃদ্ধ রেহাই পায়নি কেউ

হাইমচর ব্যুরো
হাইমচরে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে ঘরে ঘরে চোখ উঠা রোগী রয়েছে। এমন কোন ঘর বা পরিবার নেই চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হয়নি। প্রতিটি ঘরেই শিশু থেকে বৃদ্ধ, কেউ রেহাই পায়নি এ রোগ থেকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ রোগকে কনজাংটিভাইটিস বললেও সাধারণ মানুষের কাছে চোখ ওঠা নামে পরিচিত এ রোগটি।
তবে ঘরে ঘরে এ রোগ থাকলেও বাড়িতে থেকেই প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠছেন রোগীরা।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পথেঘাটে চোখ উঠা রোগী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়া এসব চোখ ওঠা রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফার্মেসি ও পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত এ রোগীরা ফার্মেসিগুলোতে ভীড় করছে।
আলগী বাবাজার বিসমিল্লাহ মোড় পল্লী চিকিৎসক টিটু জানান, দিন দিন চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। প্রতিদিন গড়ে আমার দোকানে ৪০ থেকে ৫০ জন চোখ ওঠা রোগী আসছে। যে ঘরে একজনের এ রোগ হয় ঐ পরিবারের সবাইকে এ সমস্যায় পরতে হয়। এই চোখ ওঠা রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে পরিবারের লোকজনসহ আশপাশের লোকজনের মাঝে দ্রুত ছড়াচ্ছে। এ রোগের জন্য চোখের ড্রপ ব্যবহার ও নাপা ঔষুধ খেয়েই সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগীরা।
দৈনিক ইলশেপাড়ের হাইমচর উপজেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ হোসেন দিপুর পরিবারের সবাই চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। পরিবারের কিছুসংখ্যক সুস্থ হলেও এখনো অনেকেই অসুস্থ রয়েছেন। এ প্রতিনিধি জানান, তার ৪ মাস বয়সের কন্যা সন্তানও এ চোখ উঠা রোগ থেকে রেহাই পায়নি। এছাড়া তার স্ত্রী, ২ ছেলে ও বৃদ্ধা মা এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা এ রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য কালো চশমা ব্যবহারের পাশাপাশি চোখের ড্রপ ব্যবহার ও নাপা ঔষুধ সেবন করছেন।
আলগী দক্ষিণ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিন্দু রানী জানান, আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অসংখ্য চোখ উঠা রোগী চিকিৎসার জন্য আসে। আমরা তাদের ড্রপ ব্যবহার করার পাশাপাশি ঘনঘন চোখে পানি দিয়ে পরিস্কার করার পরামর্শ দিচ্ছি।
হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মসুদুর রহমান জানান, চোখ ওঠা অসংখ্য রোগী হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে। আমরা তাদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা প্রদান করি। এখন পর্যন্ত কোন রোগীকে ভর্তি করতে হয় না। চোখ ওঠা রোগীরা ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। চোখ উঠা রোগীর সংখ্যা এবার অনেকটাই বেশি। আতংকিত কিংবা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে ৫/৭ দিনের মধ্যে রোগী ভাল হয়ে ওঠে।

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২।