সাহেদ হোসেন দিপু
হাইমচরে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড না থাকায় যেখানে-সেখানে পার্কিং করছে সিএনজিসহ ইজিবাইকগুলো। ফলে উপজেলা সদর আলগী বাজারের প্রতিটি সড়কেই ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পথচারীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্ট্যান্ড না থকেলেও উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে কিছু প্রভাবশালী চক্র জিপি নামে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা সদর আলগী বাজারের বিসমিল্লাহ মোড়, অগ্রণী ব্যাংক মোড়, বড় মসজিদ মোড়, হাসপাতাল মোড়, থানা রোডসহ প্রতিটি মোড়েই (সড়ক) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে সিএনজির অস্থায়ী স্ট্যান্ড করায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ব্যবসায়ী ও পথচারীরা। ফলে মোড়গুলোতে যানজট লেগেই থাকে প্রতিনিয়ত। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ব্যবসায়ী, পথচারীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
সরজমিনে দেখা যায়, হাইমচর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র সদর আলগী বাজারে ৫ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাজারের প্রতিটি মোড়ে রাস্তার দু’পাশের দোকানগুলোর সামনে সিএনজি থামিয়ে রাখায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। উপজেলায় প্রায় ৩/৪শ’ এবং বহিরাগত প্রায় ১শ’ সিএনজি, ইজিবাইক ও প্রাইভেট কার প্রতিনিয়ত চাঁদপুর-হাইমচরে যাতায়াত করে থাকে। এ গাড়িগুলোর জন্য নির্দিষ্ট কোন স্ট্যান্ড না থাকায় গাড়ি গুলো যত্রতত্র পার্কিং করে যাত্রী উঠা-নামার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে। কিন্তু সিএনজি ও অন্যান্য গাড়ির নির্দিষ্ট কোন স্ট্যান্ড না থাকলেও জিপি নামক চাঁদা তোলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
এ নিয়ে কথা হয় বিসমিল্লাহ মোড়ের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে। তারা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে লোকজন তাদের পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে আসছে বাজারে। আমাদের দোকানের সামনে সিএনজি রাখার ফলে কোন ক্রেতা দোকানে ঢুকতে পারছে না। এতে করে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো জরুরিভাবে এর একটি ব্যবস্থা করার জন্য।
এ ব্যাপারে কথা হয় কয়েকজন সিএনজি চালকের সাথে। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা চাঁদপুর-হাইমচরে যাত্রী নেয়া-আনা করি। স্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ আমাদের কোন নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড করে দিতে পারেনি। আমরা হাইমচরে প্রবেশ করলেই তারা প্রতিটি মোড়ে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের কাছ থেকে জিপি নাম করে দৈনিক ৩০ টাকা নিচ্ছে। আমরা টাকা দিতে না চাইলে তারা পেশীশক্তি ব্যবহার করে আমাদের গায়ে হাত তুলে এবং থানায় ফোন করে সিএনজি ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। আমরা নিরুপায় হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে সিএনজি রেখে যাত্রী পরিবহন করে থাকি। আমরা আশা করি প্রশাসন এর একটি সুষ্ঠু সমাধান দিবেন।
আলগীবাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম কোতয়াল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আলগী বাজারে গাড়ির কোন স্ট্যান্ড না থাকলেও প্রতি মাসে উত্তোলিত জিপির প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা যাচ্ছে কোথায় তা আমরা বলতে পারছি না। আমরা জানি এটার সাথে রাঘব-বোয়াল জড়িত। আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছি। আমাদের দাবি ব্যবসায়ী ও পথচারীদের স্বার্থে বাজারের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।
এ ব্যাপারে হাইমচর থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেন জানান, আমরা সব অনিয়মের বিরুদ্ধেই কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আমরা ঐসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেব।
জিপির চাঁদার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নাই। অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

