বৃষ্টি হলেই পাঠদান বন্ধ
ফয়সাল আহমেদ
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কচুয়া উপজেলার ফতেহপুর ওল্ড স্কীম দাখিল মাদরাসা। দোচালা টিনশেড ঘরে তখন থেকে অদ্যাবধি চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। গত ৮৬ বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে টিনশেড ঘরটিও। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ভিজে যায় অফিসের গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র ও কাগজপত্র। সেই সাথে বই-খাতা নিয়ে বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, মাদরাসায় প্রথম শ্রেণি থেকে দাখিল পর্যন্ত ৩৫১ জন শিক্ষার্থী থাকলেও প্রতিদিন প্রায় ২০০ জন বা তার কম শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। মাদ্রাসার এমন দূরবস্থা দেখে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে চাচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থী চলে যাচ্ছে এ মাদ্রাসা থেকে। যে ক’জন শিক্ষার্থী রয়েছেন বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ নিয়ে লেখাপড়া করছে এ প্রতিষ্ঠানে। ১৯৩৮ সালে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ৮৬ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরেই এখন পর্যন্ত চলছে শিক্ষাকার্যক্রম।
মাদ্রাসাটি ৮৯ শতাংশ জমিতে ১৯৩৮ সালে মরহুম মাও. মো. কামরুজ্জামান সিদ্দিকী জৈনপুরী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬০ সালে মাদ্রাসাটি এমপিওভূক্ত হয়। ওই মাদ্রাসায় বর্তমানে ১০ জন শিক্ষক রয়েছেন। একদিকে জরাজীর্ণ টিন সেডে পাঠদান ব্যাহত অপরদিকে শিক্ষক সংকট রয়েছে। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুনামের সাথে ভালো ফলাফল করে আসছে।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান, বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে ভিজে যায় বই-খাতা। তখন শ্রেণিকক্ষের মধ্যে বসে থাকাও অনেক কষ্টকর ব্যাপার হয়ে পড়ে। আমরা দ্রুত মাদরাসার জন্য একটি পাকা ভবনের দাবি জানাচ্ছি।
মাদরাসার সুপার আবু বকর ছিদ্দিক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, মাদরাসার দোচালা ঘরটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় রয়েছি। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। বর্ষা এলেই আতঙ্কে থাকি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেও কোনো কাজ হয়নি। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রম আরো বেগবান করতে শিগগিরই একটি পাকা ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসার সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসাটি জরাজীর্ণ। শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে পড়াশুনা করতে পারে না। বৃষ্টি হলে টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে ক্লাস রুমে ভর্তি হয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের বই-খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। নতুন ভবন নির্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কচুয়ার সাংসদ ড. সেলিম মাহমুদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কেএম সোহেল রানা বলেন, উপজেলার প্রতিটি মাদরাসায় পর্যায়ক্রমে পাকা ভবন হবে। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চাঁদপুর শিক্ষা প্রকৌশল দফতরে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে মাদরাসায় নতুন ভবনের জন্য আবেদন করতে হবে।
১৫ জুলাই, ২০২৪।