স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এ বছর চাঁদপুরে এবার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার উৎপাদন হবে ৫ হাজার মেট্রিক টন। নদীর তীর সংলগ্ন এলাকাগুলোতে ব্যাপকহারে এ সরিষা চাষাবাদ ও উৎপন্ন হয়ে থাকে।
মেঘনার পশ্চিম তীরে রয়েছে ১১টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল। চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টার পরেই সরিষার স্থান। আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষি উপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষিরা ব্যাপকহারে সরিষা চাষ করছে।
বিশেষ করে, চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক সরিষা চাষাবাদ ও উৎপাদন করে থাকে চাষিরা। অতীব দুঃখের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষিদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। চরাঞ্চলগুলো হলো- মতলবের চর-ইলিয়ট, চর-কাসিম, সবজি কান্দি, জহিরাবাদ, ষষ্টখন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর, জাহাজমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চর-গাজীপুর মনিপুর, মধ্যচর, মাঝির বাজার, সাহেব বাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি। ঐসব চরগুলোতে বিপুল পরিমাণে সরিষা চাষাবাদ হয়ে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্রমতে, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৩শ’ ১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪শ’ ৩৫ মে. টন। মতলব উত্তরে চাষাবাদ হয়েছে ১হাজার ৩শ’ ৩৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮শ’ ৪০ মে. টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ৬শ’ ১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮শ’ ৫৪ মে.টন। হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৪শ’ ১৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ’ ৮১ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ২শ’ ২৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩শ’ ১৫ মে.টন। কচুয়ায় চাষাবাদ ৩শ’ ৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১শ’ ১৫ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ১শ’ ৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২শ’ ১০ মে.টন এবং হাইমচরে চাষাবাদ ৭৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১শ’ ৫ মে.টন।
জেলার ৪ রাষ্ট্রয়ত্ব সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও কৃষি ব্যাংক এ বছর ৫৪ লাখ টাকা ডাল, তৈল, মসলা ও ভুট্টা চাষাবাদে ঋণ হিসেবে বরাদ্দ প্রদান করেছেন বলে ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে।
৩ জানুয়ারি, ২০২১।