আজ চাঁদপুরে অর্ধ শতাধিক গ্রামে আগাম ঈদ


ইলশেপাড় রিপোর্ট
আজ রোববার আরব দেশসূমহের সাথে সংগতি রেখে চাঁদপুরের অর্ধ শতাধিক গ্রামে ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করা হবে। দেশের নিয়মের একদিন আগে সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারীরা ঈদ পালন করে। গত ৯১ বছর যাবতই আরব দেশসমূহের সাথে সঙ্গতি রেখে তারা রোজাসহ ঈদ উদ্যাপন করে আসছে। দীর্ঘ বছরেও চাঁদপুরে আগাম ঈদ উদ্যাপন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়নি। ফলে হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের প্রায় লক্ষাধিক অনুসারী এবারো আগাম ঈদ উদযাপন করবে।
সাদ্রা ছাড়াও জেলার অর্ধ শতাধিক গ্রামের একাংশে ওই পীরের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদ্যাপন করেন। গ্রামগুলো হচ্ছে- হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মোহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এছাড়া চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থানে মাওলানা ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদ্যাপন করেন।
১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইছহাক খান আরব দেশসমূহের সাথে সঙ্গতি রেখে ঈদ উদ্যাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসী অসহযোগিতা করলে সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়। দেশের সরকারি নিয়মের বাইরে একদিন আগে ঈদ পালনের উদ্যোগ গ্রহণের কারণে সে সময় মাওলানা খানকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মাওলানা খান ওই বছরই চলে আসেন নিজ গ্রাম একই ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাদ্রায়। আরব দেশসমূহের রীতিনীতি অনুযায়ী ধর্ম-কর্ম পালনের জন্য প্রথমে নিজ গ্রামে শুরু করেন ব্যাপক গণসংযোগ। গ্রামের অসহায়, দুঃস্থ মুসলমানদের প্রচুর আর্থিক সাহায্য দিয়ে আরব দেশগুলো সাথে সংগতি রেখে একদিন আগে ঈদসহ সব প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদ্যাপন প্রথা চালু করেন।
এদিকে একদিন আগে ঈদের জামাত করা নিয়ে মতবিরোধে সৃষ্ট সংঘর্ষে ১৯৮৬ ও ‘৮৭ সালে দুই ঈদে দু’শতাধিক মানুষ আহত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর সাদ্রায় ঈদের দিন ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

১১ আগস্ট, ২০১৯।