আহসান হাবীব সুমন
আলু উৎপাদনের জন্য বীজ রোপণের সময়। তাই মাঠ প্রস্তুতে ব্যস্ত কচুয়া উপজেলার কৃষকরা। কিন্তু যেখানে অন্যান্য বছর কৃষকরা উৎসবমুখর পরিবেশে বীজ রোপণ করেছিল সেখানে এবার কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ সারের দাম ও জমি হাল চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং আলুর চড়া দাম পেয়ে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বীজ আলু বিক্রি করে দিচ্ছে মজুদ ব্যবসায়ীরা।
চলতি বছর সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল ২৭ টাকা। সরেজমিনে হিমাগারে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামের কোন তোয়াক্কা করছেন না আলু ব্যবসায়ীরা। ৪৫-৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বীজ আলু। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে বীজ আলুর সংকট।
কচুয়া অবস্থিত গুলবাহার-১, ২ ও মনার্ক কোল্ড স্টোরেজ হিমাগারে এ বছরে প্রায় ১৪ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুদ করেছিল এ উপজেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩টি হিমাগারে ১১ হাজার মেট্রিক টন আলু বিক্রি করে দিয়েছে আলু মজুদকারী ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ মেট্রিক টন আলু হিমাগার থেকে উত্তোলন করছে মজুদকারীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মেজবাহ উদ্দিন জানান, উপজেলা এ বছরে আলু রোপণ করার জন্য ২ হাজার ৫ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে বীজ বপন করতে ৩ হাজার মেট্রিক টন বীজ আলু প্রয়োজন হবে। এসময় তিনি জমিতে কৃষকদের রাসায়নিক সার ব্যবহার কমিয়ে জৈব সার ব্যবহার করার আহŸান জানান।
এদিকে কৃষকরা বলছেন, এটি ব্যবসায়ীদের বেশি দামে বিক্রির জন্য নতুন কৌশল। এরইমধ্যে অনেক কৃষক জমিতে গোবর সার ও রাসায়নিক সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন। বীজ সংকটে তাই তাদের বাধ্য হয়েই বেশি দামে বীজ আলু ক্রয় করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, হিমাগারে যে আলু রয়েছে তার বেশিরভাগ আলু ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি আলু ১১-১২ টাকা কেজি দামে ক্রয় করেছে। সব খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি আলুর দাম পরে ১৮-২০ টাকা। তারা ইচ্ছে করলেই সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে আরো এক/দুই টাকা কমে বিক্রি করতে পারে। কিন্তু গত বছর আলুর দাম কম থাকায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়নি তাই এবার তারা সেই ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারলাম দ্রæত বিষয়টির সম্পর্কে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৩।