কুমিল্লার ১৬টি মডেল মসজিদের কাজে ধীরগতি

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল
চরম ধীরগতিতে চলছে কুমিল্লার দাউদকান্দি ও চান্দিনা ছাড়া বাকি ১৬টি মডেল মসজিদের কাজ। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় মডেল মসজিদের কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে জেলার চান্দিনাতেও কাজ শেষের দিকে। এছাড়া বাদবাকি ১৬টি উপজেলায় কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। গত ডিসেম্বরে (২০২০) কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও ওই সময়ের মধ্যে মসজিদের জমি নির্বাচনই করতে পারেনি কয়েকটি উপজেলায়। কাজের এই ধীরগতি সম্পর্কে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীর কাছ থেকে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুমিল্লা জেলার উপ-পরিচালক সরকার সরোয়ার আলম জানান, এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগ সর্বশেষ আডডেট তথ্য দিতে পারবে। কারণ কাজটি করতো গণপূর্ত বিভাগ। আমাদের হাতে যে তথ্য আছে তা হলো, দাউদকান্দির শেষ হয়েছে। এছাড়া চান্দিনার প্রথম তলা, কুমিল্লা নগরী, আদর্শ সদর, ব্রাহ্মণপাড়া, নাঙ্গলকোট, চান্দিনা, লাকসাম, লালমাই, হোমনা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মডেল মসজিদের জমি নির্বাচন ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, কাজও শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, মনোহরগঞ্জ, বরুড়া, দক্ষিণ সদর, দেবিদ্বার, তিতাস, মেঘনা ও মুরাদনগরের মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ। এর কোনোটার জমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান আছে, কোনোটার অধিগ্রহণ সদ্য সম্পন্ন হয়েছে, দ্রুতই কাজও শুরু হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর সাত্তারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অফিসিয়াল ফোন নম্বরে কল দিলে অফিস সহকারী রিসিভ করেন, তবে এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি না বলে জানান।
ইসলামী ফাউন্ডেশনের সূত্রমতে, ২০১৪ সালের বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের অংশ এ মডেল মসজিদ। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় ১৮টিসহ দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেয় সরকার।
‘মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’ শিরোনামে এ কাজে জেলা শহরে লিফট-এসিসহ চারতলা, উপজেলা শহরে তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ হবে। যার মধ্যে জেলায় ১২শ’ ও উপজেলায় ৮শ’ মানুষ একসাথে নামাজ আদায় করার সুযোগ পাবেন।
এছাড়া নারী-পুরুষের পৃথক অজু ও নামাজের স্থান, পাঠাগার, গবেষণাকেন্দ্র, হজ্জ যাত্রীদের নিবন্ধন, পর্যটকদের আবাসন ব্যবস্থা, দাওয়াতি কার্যক্রম, হিফজ মাদ্রাসা, মক্তব, মৃত ব্যক্তির গোসলের ব্যবস্থা, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসন প্রকল্পসহ বহুমুখী ইসলামি কার্যক্রম ও সেবার কথা বলা আছে।
এ প্রকল্পের বিষয়ে ইসলামী চিন্তাবিদরা বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এ প্রকল্প শতাব্দীর পর শতাব্দী ইসলামী চর্চায় ভূমিকা রাখবে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে এ প্রজন্মের মুসলিম লেখকরা উপকৃত হবেন।
জানা গেছে, প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার ১৭টি উপজেলায় মোট ১৮টি মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ চলছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে গণপূর্ত বিভাগ এসব মসজিদগুলোর নির্মান কাজ চালাচ্ছে।
এপ্রিল ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকরেও প্রকল্পের মেয়াদ হিসাবে কুমিল্লা জেলার ১৮টি মসজিদের মধ্যে ১৬টিরই কাজে তেমন অগ্রগতি নেই।

১৬ জুন, ২০২১।