এস এম সোহেল
চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী বেবী বেগম (৪৫) কে হত্যা করে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার করে স্বামী খোরশেদ আলম পাটওয়ারী (৬০)। পুলিশ পৃথক ঘটনাস্থল থেকে উভয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে। গতকাল রোববার ভোরে ওই ইউনিয়নের গুলিশা গ্রামের পাটওয়ারী বাড়িতে হত্যার এই ঘটনা ঘটে। খোরশেদ আলম সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের বঙ্গবন্ধু সড়কে লাকসাম থেকে ছেড়ে চাঁদপুরগামী ডেম্যু ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মারা যান। বেবী-খোরশেদ দম্পত্তির ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের সবারই বিয়ে হয়েছে।
নিহত বেবী বেগম ফরিদগঞ্জ উপজেলার হাঁসা গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত আবুল হাশেম শেখের মেয়ে। খোরশেদ আলম সদরের বালিয়া ইউনিয়নের পাটওয়ারী বাড়ির মৃত আবদুল কুদ্দুছ পাটওয়ারীর ছেলে। বেবী-খোরশেদ দম্পত্তির ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।
বেবী বেগমের বড় ভাই মফিজুল ইসলাম শেখ জানান, বেবী আমার ছোট বোন। সকালে আমার ভাগ্নি ফোন করে বলে তার বাবা ট্রেনের নিচে পড়ে মারা গেছে। তাৎক্ষণিক সদর হাসপাতালে এসে দেখি খোরশেদের মরদেহ পড়ে আছে। সাথে সাথে ওই এলাকার ইউপি সদস্য দেলোয়ার মিজিকে ফোন দেই। ইউপি সদস্য তাকে জানান, তার বোনকে কুপিয়ে হত্যা করে খোরশেদ আত্মহত্যা করেছে।
মফিজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তার বোনের মৃত্যুটি পরিকল্পিত। বোনকে এর আগেও পারিবারিক কলহের কারণে মারধর করেছে খোরশেদ।
বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে বেবী বেগমের ভাইদের নিয়ে ওই বাড়িতে যাই। পরে খোরশেদ আলমের ঘর তালাবদ্ধ পাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ঘরের দরজা খুলে দেখতে পাই একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে বুঝতে পারি বেবী বেগমের মরদেহ। ধারণা করা হচ্ছে খোরশেদ স্ত্রীকে হত্যা করে নিজে চাঁদপুরে গিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে মারা গেছে। কি কারণে হত্যা এবং আত্মহত্যা তা বলা যাচ্ছে না। পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা হতে পারে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করলে রহস্য উদঘাটন হবে।
চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্টেশনের লিডার ওসমান গনি কয়েকজন ফায়ারম্যানসহ বঙ্গবন্ধু সড়কে রেললাইন থেকে গুরুতর অবস্থায় খোরশেদ আলমকে উদ্ধার করে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিজানুর রহমান কিছুক্ষণ পরই তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রব জানান, কী কারণে এমন ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহ’ই মনে হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসিম উদ্দিন জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে বেবী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং খোরশেদ আলমের মরদেহ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ঘটনাটি তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
১৫ জুলাই, ২০১৯।