কচুয়া ব্যুরো
কচুয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দেয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ব্যারাক, গ্যারেজ বিল্ডিং, অফিস কক্ষের পিলার, দেয়াল ও ছাদের প্লাস্টার ক্ষয়ে-ক্ষয়ে পড়ছে। বেঁকে গেছে জানালার রড। সীমানা প্রাচীর নিচু হওয়ায় তা আরো উঁচু করা প্রয়োজন।
১৯৯৮ সালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি কচুয়া বিশ্বরোড এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভবন ও ব্যারাকটি উদ্বোধন করেন। এর পর থেকে আর ঐ ভবন ও ব্যারাকের সংস্কার করা হয়নি।
কচুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. ইয়াছিন প্রধানীয়া জানান, ২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর এ স্টেশনটি উদ্বোধন করা হয়। ২১ বছরেও একবারের জন্য সংস্কার করা হয়নি ভবনটি। উল্লেখিত সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে চাঁদপুর জেলা কার্যালয়সহ গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে কয়েকবার জানানো হলেও কোন ধরনের ফল পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের প্রথম ও দোতলা ভবনের বিভিন্ন স্থানে বিপজ্জনক ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ এই ভবনটি ধসে পড়ার পর্যায়ে পৌঁচেছে। প্রায় ২১ বছরেও এখানে উল্লেখযোগ্য কোন সংস্কার কাজ করা হয়নি।
ফায়ারম্যান কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অগ্নিকা-, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় বিপন্ন মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করলেও এখন তারাই আতঙ্কে সময় পার করছেন।
ফায়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ভবনের ছাদ, কার্নিশসহ বিভিন্ন অংশে বিপজ্জনক ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে তাদের জীবনযাপন এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, আমরা যদি দুর্ঘটনার কবলে পড়ি তবে আমাদের উদ্ধার করবে কে? কর্মচারী ও অন্যান্য ফায়ারম্যানরা জানান, ভবনটির দুরাবস্থার কারণে কচুয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশংকায় সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকেন। কিন্তু বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ২১ বছর আগের নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ভবনটির নিচতলায় রয়েছে কচুয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তার অফিস কক্ষসহ ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি রাখার জায়গা এবং দ্বিতীয় তলায় রয়েছে কর্মকর্তাদের থাকার জায়গা ও স্টাফদের ব্যারাক।
এখানে নিয়মিতভাবে বসবাস করছেন ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ১ জন স্টেশন অফিসার, ১৬ জন ফায়ারম্যান, ২ জন টিম লিডার, ৩ জন গাড়ি চালক, ১ জন বাবুর্চি ও ১ জন ঝাড়ুদার।
এসব রুমগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ও ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে এবং দ্বিতীয় তলায় অফিসার কোয়ার্টারেরও একই অবস্থা। শুধু তাই নয় গাড়ি রাখার জায়গায় ভীমের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ব্যবহারের জন্য যে বাথরুমগুলো রয়েছে সেগুলোর অবস্থাও নাজুক। বাথরুমের দরজা ভাঙা, কমোড ব্যবহার অনুপযোগী এবং ফ্লাশগুলোও নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। রান্নাঘরের অবস্থাও একই রকম। এছাড়া বাসভবন, জ্বানালী স্টোর, পাম্প হাউজ ও ইলেক্ট্রক্স ভবনও সংস্কার করা হয়নি।
এদিকে কচুয়া উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের অগ্নি ও বড় ধরনের দুর্ঘটনার নিরাপত্তায় নির্মিত একমাত্র ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন কচুয়াবাসী।

