গ্রাম আদালতের বিচারিক-সেবা সবার কাছে পৌঁছাতে হবে
. …………..উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাজাহান শিশির
স্টাফ রিপোর্টার:
গ্রামীণ জনগণের মাঝে কীভাবে গ্রাম আদালতের ওপর ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা যায় যাতে স্থানীয় জনগণ বিশেষত: নারী, দরিদ্র ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠী নিজেদের মধ্যকার বিরোধগুলো স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ে, স্বল্প খরচে ও স্বচ্ছতার সাথে নিষ্পত্তি করতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য কচুয়া উপজেলা প্রশাসন ‘গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) -এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পরিচালিত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের সহযোগিতায় কর্মশালা গত সোমবার কচুয়া উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। কচুয়া উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া। কর্মশালায় মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী মো. আমিনুর রহমান।
প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির তার বক্তৃতায় বলেন, গ্রাম আদালতের বিচারিক-সেবা সবার কাছে পৌঁছাতে হবে। এ সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা না থাকায় গ্রামে অনেক ছোট-খাটো ঘটনা ঘটলেও সাধারণ মানুষ তার প্রতিকার চাইতে থানা বা জেলা আদালতে আসেন যাতে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয়। গ্রাম আদালতের সেবা সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাগণ সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রাম আদালতকে আরো কার্যকর করা, স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং সেবা গ্রহণে উৎসাহিত করতে আমাদের যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে। সাধারণ মানুষের হয়রানী রোধে বর্তমান সরকার বিচারিক সেবা একেবারে গ্রামে নিয়ে এসেছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা আফরোজ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোট-খাট বিরোধ কার্যকরভাবে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। তিনি এই বিচারিক সেবার বার্তা উপজেলার সকল মানুষের কাছে বিশেষ করে দরিদ্র, সুবিধা-বঞ্চিত গ্রামীণ জনগণের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, গ্রাম আদালতের অন্যতম অংশীজন হিসেবে সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা গ্রাম আদালতের সাফল্য তুলে ধরে এর প্রতি মানুষের আস্থা বাড়াতে পারি।
কর্মশালায় মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস বলেন, প্রান্তিক এলাকার জনগণ বিশেষ করে দরিদ্র নারী ও অসহায় জনগোষ্ঠী যাতে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে কম সময়ে ও কম খরচে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারেন এ জন্য আমাদের সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প চাঁদপুর জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ৪৪টি ইউনিয়নে কাজ করে। তবে গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ (সংশোধন ২০১৩) অনুযায়ী বাংলাদেশের সব ইউনিয়নেই গ্রাম আদালত থাকার কথা।

