মনির হোসেন
খানা-খন্দে বেহাল অবস্থা হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত চাঁদপুর-চান্দ্রা-মুন্সিরহাট-রামগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়কটি। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচলকারীরা যাত্রী ও গাড়ি চালকসহ পথচারী। এমনকি পায়ে হেটে হোক, আর যানবাহনে এই পথ পাড়ি দিতে হলেই পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ, চলাচলকারীদের দুর্ভোগ কমাতে এগিয়ে আসছে না সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
ঢাকা-বরিশালসহ বিভিন্ন গন্তব্যে লঞ্চ যোগে নিরাপদ গমনে কম সময়ের মধ্যে যেতে রামগঞ্জ উপজেলাসহ ফরিদগঞ্জের উত্তর পূর্বাঞ্চল ও ফরিদগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা এই সড়কে নিয়মিত চলাচল করছে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের অভাবে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকারে পৌঁছেছে। দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারহীন থাকায় সড়কটিতে ছোট বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সড়কটির ইচলী চৌরাস্তা থেকে গল্লাক বাজার পর্যন্ত অনেক জায়গায় পিচ উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং দুই পাশ দেবে গিয়ে ভেঙ্গে গেছে এবং বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটির চান্দ্রা-ডাক্তারের ব্রিজ থেকে সরখাল ভদ্রের বাড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তা যানবাহন চলাচলে একেবারেই অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। এই অংশে কোনরকম সংস্কার না করায় বড় বড় গর্ত এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সরখাল এলাকায় এমন কোন দিন বাদ নেই যে দু-তিনটি গাড়ি কাত হয়ে একপাশে পড়ে না। সামনে বর্ষার সিজন যার কারণে রাস্তাটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়বে বলে ভুক্তভোগীদের ধারণা।
সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের মধ্যে অটো, সিএনজি, তেলের ভাউচার বড় ধরনের কাবার বেন, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনের ড্রাইভারদের সাথে কথা হলে তারা অত্যন্ত আক্ষেপের সাথে বলেন, সময় সংক্ষিপ্ত করার জন্য আমরা এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে আসি। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিনিয়তই আমরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছি।
রাস্তার দু’পাশের স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্থানীয় ড্রাইভারেরা জানান, মাঝেমধ্যেই রাস্তাটি নামকাওয়াস্তে সংস্কার করা হয়। কিন্তু মাস না যেতেই পুনরায় পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় মানুষের মতামত সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সঠিকভাবে তদারকি না করার কারণেই সংস্কার কাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং রাস্তাটি দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
এই সড়কে দৈনিক শতশত যানবাহন চলাচল কারীর মধ্যে যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোর একাধিক যাত্রীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, চাঁদপুর জেলা শহর এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ ভ্রমনে লঞ্চ যুগে যাতায়াতের জন্য কম সময়ের মধ্যে যাতায়াত করতে আমরা এই সড়কটি ব্যবহার করি। কিন্তু সড়কটির বর্তমানে একেবারেই নাজুক পরিস্থিতি। তারা আরো বলেন, মাঝেমধ্যেই সড়কটিতে সংস্কারের কাজ করা হলেও মাস না যেতেই আবার বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরে যায় এবং ধূলাবালিতে পরিবেশ দূষিত হয়ে ওঠে। রাস্তাটি দেখে মনেই হচ্ছে না এটি একটি আঞ্চলিক সড়ক।
তারা আরও বলেন রাস্তাটি দিয়ে রোগী নিয়ে যাওয়াটা একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সামনে বর্ষার সিজন, রাস্তাটি এখনই যদি ভালোভাবে মেরামত করা না হয়, তাহলে রাস্তাটি এই অঞ্চলের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে পরিণত হবে।
বিষয়টি নিয়ে চাঁদপুর সড়ক ভবনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সড়কটির বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে তারা জানেন। এই সমস্যা দূরীকরণে আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই মেরামত করা হবে। আগামি অর্থবছরে এই সড়কটি পিএমপি’র (মেজার) মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
২৮ এপ্রিল, ২০২৫।
