ভিক্ষাবৃত্তি করেই সংসার চলে স্বামীহারা বৃদ্ধা বিজয় লক্ষ্মীর জুটেনি বিধবা বা বয়স্ক ভাতা

স্বামীহারা বৃদ্ধা বিজয় লক্ষ্মীর জুটেনি বিধবা বা বয়স্ক ভাতা

চাঁদপুর শহরের কুলি বাগান এলাকার স্বামীহারা বৃদ্ধা বিজয় লক্ষ্মী দে ভিক্ষাবৃত্তি করেই জীবন সংগ্রামে বেঁচে আছেন। ভিক্ষাবৃত্তি করেই কোন রকম দিন পার করছেন পয়ষট্টি বছরের বৃদ্ধা বিধবা বিজয় লক্ষ্মী দে। জীবনের এই শেষপ্রান্তে এসেও তার ভাগ্যে জুটেনি সরকারি কোন সুযোগ সুবিদা, কিংবা কোন অনুদান।

ক’দিন আগে চাঁদপুর আদালত প্রাঙ্গণে এ প্রতিবেদকের সাথে দেখা মিলে বৃদ্ধা বিজয় লক্ষ্মীর। দেখা যায় আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন জনের কাছে ভিক্ষার জন্য হাত বাড়িয়েছে ঐ বৃদ্ধা। এ বয়সে তার এমন ভিক্ষাবৃত্তি দেখে জানতে চাওয়া হয় তার জীবন সম্পর্কে। তিনি শুনান তার সুবিধাবঞ্চিত জীবনের গল্প। প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে তিনি এই ভিক্ষাবৃত্তি করে চলেছেন।

যদি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন একটি ভিক্ষুকমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সেখানে হয়তো কোন ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিজয় লক্ষ্মী চাঁদপুরের ভিক্ষুকমুক্ত সে ঘোষণাকে ধূলোয় মিশে আজো ভিক্ষাবৃত্তি করে চলেছেন। তবে এর জন্য তিনি দায়ী করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।

ভিক্ষাবৃত্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বিজয় লক্ষ্মী দে বলেন, আমি সরকারি কোন সুযোগ-সুবিদা পাইনি বাবা। সরকারি কোন ধরনের কোন প্রকার অনুদান কিংবা কোন বয়স্ক এবং বিধবা ভাতাও পাইনি। এসব ভাতা পাওয়ার জন্য আমি বেশ কয়েকবার কাউন্সিলর নাছির চোকদার এবং ফরিদা ইলিয়াসের কাছে গিয়েছি কিন্তু তারা আমার জন্যই কিছুই করেনি।

এভাবে বেশ কয়েকবার যাওয়ার পর তারা শেষ ভরসা হিসেবে বলেছেন যদি ভাতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি মারা যান তাহলে ওই ব্যক্তির পরিবর্তে আমাকে সে ভাতার তালিকায় নাম বসিয়ে দিবে। তাদের এমন আশ্বাসে আমি এখন ভাতা পাওয়া কোন ব্যক্তির মৃত্যুর অপেক্ষার প্রহর গোনা ছাড়া আমার তো কিছুই করার নেই। সে আশায় থাকলে দেখা গেছে হয়তোবা আমিও তাদের আগে মরে যেতে পারি। সে কথা চিন্তা করলে এই জীবনে আমার আর কোন ভাতা হবে না। তাই নিরুপায় হয়েই পেটের তাগিদে ভিক্ষা করছি।

চাঁদপুর শহরের জেডিসি কলোনীতে (কুলি বাগান) বিজয় লক্ষ্মী দের বসবাস। স্বামী মানিক চন্দ্র দে মারা যান প্রায় ৮ বছর আগে। তার স্বামী জীবিত থাকতে প্যারালাইসিসের রোগী হওয়ায় তখন থেকেই তিনি ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন।

তিনি জানান, তার ঘরে দুই মেয়ে আছে, কোন ছেলে নেই। দুই মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়েছে অনেক আগেই। তাই নিরুপায় হয়েই জীবনের তাগিদে মানুষের কাছে তার হাত পাতা।

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে যেনো বিজয় লক্ষ্মী দে বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতা পেয়ে সংসার চালানোর জন্য যাতে একটু স্বস্তি পান। তিনি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

স্টাফ রিপোর্টার