পাটের আঁশ ছাড়িয়ে বাড়তি আয় নারীদের

মনিরুল ইসলাম মনির
মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকাজুড়েই চলছে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাটের আঁশ ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ। এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার পাট চাষিরা। পাটের দাম মোটামুটি ভালো পাওয়ায় এ বছর চাষিদের লাভের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, পাট মৌসুমে বাড়তি আয়ের সন্ধানে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন মতলব উত্তরের নারীরাও।
এবছর নদী ও খাল-বিলে বন্যার পানি আসায় সময়মতো পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন জেলার কৃষকরা। শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় অনেক কৃষকই নারীদের দিয়ে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে নারীরা নগদ মূল্য না নিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে পাটখড়ি নিয়ে থাকেন। কিছু কিছু নারী নগদ টাকাও নিচ্ছেন।
উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, অনেক নারীই নিজেদের জমির পাটের আঁশ ছাড়ানোর পাশাপাশি অন্যের পাটের আঁশ ছাড়িয়ে পাটখড়ি নিচ্ছেন। এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ও রাস্তার পাশে নারীদের পাটের আঁশ ছাড়ানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আঁশ ছাড়িয়ে পাওয়া পাটখড়ি নারীরা আঁটি হিসেবে বিক্রি করেন। আবার অনেকে রান্নার জ্বালানি ও বাড়ির বেড়া, চালাসহ গৃহস্থালির নানা কাজের জন্য পাটখড়ি সংরক্ষণ করে রাখছেন।
উপজেলার জহিরাবাদ এলাকার রাস্তার পাশে আঁশ ছাড়াচ্ছিলেন ময়না বেগম। তিনি জানান, আঁশ ছাড়ানোর বিনিমিয়ে পাটখড়ি নেন তিনি। স্থানীয় দরিদ্র নারীদের পাশাপাশি স্বচ্ছল কৃষক পরিবারের নারীরাও অলস সময়ে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে বাড়তি আয় করছেন।
চরমাছুয়া এলাকার লাভলী বেগম বলেন, আমরা রান্না ও অন্যান্য কাজ শেষ করে সময় পেলে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করি। জ্বালানি কাজে বছরে যে পরিমাণ খড়ি দরকার তা রেখে বাকিগুলো বাজারে বিক্রি করে দেই। বর্তমানে ১০০ আঁটি পাটখড়ির দাম প্রায় হাজার টাকা।
চরকাশিম এলাকার রহিমা বেগম জানান, অনেকেই সংসারে বাড়তি আয়ের আশায় সুযোগ মতো এ কাজ করছেন। বাড়ির পুরুষের সঙ্গে উপার্জনে তারাও শরিক হচ্ছেন।
করোনায় কৃষকরা কর্মহীন ছিল বেশ কয়েকমাস। এতে পরিবারে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন অভাব-অনটন। এবছর পাটের ভাল ফলন হওয়ায় পাটের ভাল দাম পেয়ে পরিবারের অভাব মেটানোর প্রত্যাশা করছেন এখানকার কৃষকরা।

৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০।