চাঁদপুরে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণহীন

সজীব খান
হঠাৎ করেই দেশে আলুর বাজার লাগামহীনভাবে বাড়তে দেখে সরকার পাইকারি এবং খুচরা বাজারদর নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি দিলেও চাঁদপুরে এখনো আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণহীন রয়েছে। চাঁদপুরের প্রধান প্রধান বাজারগুলো এখনো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ধরে আলু বিক্রি হচ্ছে। আর মফস্বলের বাজারগুলোতে এখনো প্রতি কেজি ৫০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
সরজমিনে চাঁদপুরের বিভিন্ন হাট বাজারগুলো ঘুরে এমন অস্থিত আলুর বাজারের চিত্র দেখা গেছে। সরকারের বেঁধে দেয়া আলুর বাজার ধরের বিষয়ে বললে বিক্রেতাদের উল্টো সুর শুনতে হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে বিক্রেতাদের দেওয়া ধরেই আলু ক্রয় করে ক্রেতাদের বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। সমাজের নিম্ন শ্রেণি থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় তরকারি হচ্ছে আলু। আলু ছাড়া বলতে গেলে একটি পরিবার ও চলে না, আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোলস্টরের মালিকসহ এজেন্টরা নিজেদের ইচ্ছেমত আলুর ধর হাকিয়ে নিচ্ছে। কিছুদিন আগেও চাঁদপুরে ১৫ থেকে ২০ টাকা দর আলুর থাকলে ও গত কয়েক দিন ধরেই হঠাৎ করে আলুর দাম বেড়ে চলছে। প্রতি কেজি আলুর ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতা সাধারণের মনে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
আলুর বাজারে ঠিক মত বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছা মত আলুর দাম হাকিয়ে নিচ্ছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছে। হঠাৎ করে আলুর দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় সব শ্রেণির মানুষ চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। চাঁদপুরে এভাবে লাগামহীন আলুর বাজার থাকলে নিম্নশ্রেণির মানুষদের চরম বিপাকে পড়তে হবে।
এদিকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ অক্টোবর চাঁদপুরের পাইকারি আলুর ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন বাজার কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নিয়ে মতবিনিময় করে আলুর সরকার নির্ধারিত আলুর মূল্যে জানিয়ে দেন। সেখানে বলা হয়েছে কোল্ড স্টোরেজ মূল্যে প্রতি কেজি ২৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ টাকা এবং বাজারের খুচরা মূল্যে ৩০ হবে টাকা নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু কোথাও সরকারের নির্ধারিত মূল্যে এ পর্যন্ত আলু বিক্রি হয়নি।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) চাঁদপুর শহর থেকে শুরু করে বাবুরহাট, শাহতলী, মহামায়া, চাঁনখার বাজারসহ বেশ কয়েকটি হাট বাজার ঘুরে এবং বিভিন্ন স্থানে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেছে আলু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল চাঁদপুরের বিভিন্ন হাট বাজারের বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, কোল্ড স্টোর থেকে তাদের আলু বেশি দরে ক্রয় করতে হচ্ছে, এজন্য বেশি দরেই বিক্রি করা হচ্ছে। এখানে তাদের কিছু করার নেই। তবে এ সময় আলুর দাম এখনো না কমার কারণ অনেক এজেন্টদের বিক্রেতারা দায়ী করে করেছেন।
বিসিক শিল্প নগরীর মনোহরখাদী কোল্ড স্টোরের একাধিক এজেন্টদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিগত কয়েক বছর অনেক ব্যবসায়ী এবং এজেন্ট একে বারে নিঃস্ব হয়েছে। এ বছর আলুর দাম একটু বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের একটু বিগত দিনের ক্রাইসিস কেটেছে। তবে এ বছর করোনাকালীন সময়ে অনেক চাল ডালের সাথে আলু দেওয়ার কারনেও এখন সে প্রভাব পড়েছে। সরকারের বেধে দেওয়া নিয়মে বেচা বিক্রি এখন আপাদত স্থগিত রয়েছে।
মনোহরখাদী কোল্ডস্টোরের ম্যানেজার জানান, তাদের কোল্ড স্টোরে এখনো ২২ লাখ ৫০ হাজার কেজি আলু সংরক্ষণে রয়েছে। এর মধ্যে কিছু বিজ আলু রয়েছে। কোল্ড স্টোরের বীজ আলু ভাল থাকার কারণে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখানে আলু সংরক্ষণ রাখছে।
২০ অক্টোবর, ২০২০।